তওবার পুরস্কার

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই ও বোনেরা। আজ আমরা তওবা ও মহান আল্লাহর ক্ষমার ব্যপারে কিছু লিখার চেষ্টা করব। যে মন থেকে তওবা করে এবং আল্লাহর কাছে ফিরে আসে (ইসলামী জীবন ব্যবস্থায়), মহান আল্লাহ তাকে প্রথম পুরস্কার হিসাবে জান্নাত দান করবেন। শুধু তাই না দুনিয়াতেও নির্দিষ্ট সময় ধরে তাকে কল্যাণ ও যথাযত সম্মান দিবেন।

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً ۖ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ

মু’মিন হইয়া পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকর্ম করিবে তাহাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করিব এবং তাহাদেরকে তাহাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করিব। (সূরাঃ নাহল, আয়াতঃ ৯৭)

وَأَنِ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ يُمَتِّعْكُمْ مَتَاعًا حَسَنًا إِلَىٰ أَجَلٍ مُسَمًّى وَيُؤْتِ كُلَّ ذِي فَضْلٍ فَضْلَهُ ۖ وَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ كَبِيرٍ

তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাঁহার দিকে প্রত্যাবর্তন কর, তিনি তোমাদেরকে এক নির্দিষ্ট কালের জন্য উত্তম জীবন উপভোগ করিতে দিবেন এবং তিনি প্রত্যেক গুণীজনকে তাহার প্রাপ্য মর্যাদা দান করিবেন। যদি তোমরা মুখ ফিরাইয়া নাও তবে আমি তোমাদের জন্য আশংকা করি মহাদিবসের শাস্তির। (সূরাঃ হুদ, আয়াতঃ ০৩)

মানুষরা আমরা কোন না কোন পাপ করেই ফেলি। আর তাই আল্লাহ আমাদের মনে সঙ্কোচ, অস্বস্তি আর দুশ্চিন্তা অনুভব করিয়ে দেন এবং দুনিয়াতেই ছোট শাস্তি প্রদান করেন, যাতে আমরা বড় (জাহান্নাম) শাস্তি পাওয়ার আগেই তার দিকে ফিরে যাই। মূলত পৃথিবীতে সংগঠিত সকল বিপর্যয় (ছোট শাস্তি)মানুষেরই কর্মের ফল।

وَلَنُذِيقَنَّهُمْ مِنَ الْعَذَابِ الْأَدْنَىٰ دُونَ الْعَذَابِ الْأَكْبَرِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

গুরু শাস্তির পূর্বে উহাদেরকে আমি অবশ্যই লঘু শাস্তিআস্বাদন করাইব, যাহাতে উহারা ফিরিয়া  আসে। (সূরাঃ সাজদা, আয়াতঃ ২১)

ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়াইয়া পড়ে; যাহার ফলে উহাদেরকে উহাদের কোন কোন কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাহাতে উহারা ফিরিয়া আসে। (সূরাঃ রোম, আয়াতঃ ৪১)

যদি আমরা তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই তবে তিনি নিশ্চই আমেদের মাফ করে দিবেন। আমরা হয়ত মনে করতে পারি যে আমার কৃত পাপ ক্ষমার অযোগ্য (ইহা ভাবা নিতান্তই বোকামি এবং শয়তানের ধোকা মাত্র- “আস্তাগফীরুল্লাহ”)। আমরা প্রকাশ্যে এবং অপ্রকাশ্যে যেভাবেই পাপ কাজ করিনা কেন মহান আল্লাহ তা অবগত আছেন। সুতরাং কৃত পাপের জন্য লজ্জিত হয়ে এবং জ্ঞানত সেই পাপ আর না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে আমাদেরকে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে। যারা তওবা করে, বিশ্বাস করে ও ভাল কাজ করে আল্লাহ্‌ তাদের খারাপ কাজগুলকে ভাল কাজে রুপান্তর করে দেন।

وَمَنْ يَعْمَلْ سُوءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللَّهَ يَجِدِ اللَّهَ غَفُورًا رَحِيمًا

যে-ই খারাপ কাজ করেছে অথবা নিজের নাফসের প্রতি জুলুম করেছে, তারপর আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা চেয়েছে সে দেখবে আল্লাহ্‌ অত্যধিক ক্ষমাশীল, অতিরিক্ত দয়াময় (সূরাঃ নিসা, আয়াতঃ ১১০)

وَهُوَ الَّذِي يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَعْفُو عَنِ السَّيِّئَاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ

তিনিই তাঁহার বান্দাদের তওবা কবূল করেন ও পাপ মোচন করেন এবং তোমরা যাহা কর তিনি তাহা জানেন। (সূরাঃ আশ-শুরা, আয়াতঃ ২৫)

তাই আসুন প্রিয় ভাই ও বোনেরা আমরা, আমরা তওবা করে ইস্তিগফার করি যাতে মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের কে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জীবনে কল্যাণ দান করেন। আমিন। আসসালামু আলাইকুম।